পিরিয়ডের সময় কি কি করা উচিত নয়: সকল মেয়েদের জানা উচিত!

সোশাল মিডিয়ায় শোয়ার করুন!

5/5 - (2 votes)


পিরিয়ড বা মাসিক ঋতুস্রাব নারীদের জীবনে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রতি মাসে এই সময়টিতে অনেক নারী অস্বস্তি ও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই পিরিয়ডের সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা এবং কিছু কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব পিরিয়ডের সময় কি কি করা উচিত নয় (perioder shomoy ki ki kora uchit noy), যাতে এই সময়টা আপনার জন্য আরও সহজ ও আরামদায়ক হয়।

পিরিয়ডের সময় সঠিক যত্ন নেওয়া আপনার স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মহিলাই এই সময় কিছু ভুল করে থাকেন যা তাদের কষ্ট আরও বাড়িয়ে তোলে। আসুন জেনে নেওয়া যাক পিরিয়ডের সময় কোন কাজগুলো পরিহার করা উচিত।

পিরিয়ডের সময় যা যা করা উচিত নয়

১. প্যাড বা স্যানিটারি ন্যাপকিন দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার না করা: দীর্ঘ সময় ধরে একই প্যাড ব্যবহার করলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। তাই প্রতি ৪-৬ ঘণ্টা অন্তর প্যাড পরিবর্তন করা উচিত। এটি স্বাস্থ্যকর এবং সংক্রমণমুক্ত থাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

২. অপর্যাপ্ত ঘুম: পিরিয়ডের সময় শরীর দুর্বল থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে পুনরায় সক্রিয় করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমের অভাব আপনার শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

৩. অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ: এই সময় ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া খাবার বা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। এ ধরনের খাবার গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং অস্বস্তি বাড়াতে পারে। পরিবর্তে, পুষ্টিকর খাবার যেমন ফল, সবজি এবং প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।

আরও জানুন:

পিরিয়ডের সময় সেক্স করলে কি হয়? আসল সত্যতা জানুন!

পিরিয়ডের সময় টক খেলে কি হয়? জানুন উপকারিতা ও ঝুঁকি!

৪. অতিরিক্ত কফি বা চা পান করা: কফি বা চায়ে ক্যাফিন থাকে যা পিরিয়ডের সময় অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এর পরিবর্তে হারবাল চা বা পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা উপকারী

৫. ধূমপান মদ্যপান: ধূমপান ও মদ্যপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে পিরিয়ডের সময় এটি আরও বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। এগুলো শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে এবং ব্যথা বাড়াতে পারে।

৬. ভারী ব্যায়াম করা: পিরিয়ডের সময় হালকা ব্যায়াম করা ভালো, তবে অতিরিক্ত ভারী ব্যায়াম করা উচিত নয়। এটি শরীরের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং রক্তপাত বাড়িয়ে দিতে পারে। যোগা বা হালকা হাঁটা এই সময় উপযোগী।

৭. ব্যথানাশক ঔষধ без পরামর্শে খাওয়া: পিরিয়ডের ব্যথায় অনেকেই নিজে থেকে ব্যথানাশক ওষুধ খান। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।

৮. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব: পিরিয়ডের সময় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা খুব জরুরি। নিয়মিত স্নান করা এবং যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখা সংক্রমণ এড়াতে সহায়ক।

৯. টাইট পোশাক পরিধান করা: এই সময় আরামদায়ক পোশাক পরা উচিত। টাইট পোশাক রক্ত সঞ্চালনে বাধা দিতে পারে এবং অস্বস্তি বাড়াতে পারে।

১০. মানসিক চাপ নেওয়া: পিরিয়ডের সময় মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এটি আপনার হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে এবং পিরিয়ডের লক্ষণগুলো আরও খারাপ করতে পারে।

১১. জল কম পান করা: পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান না করলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে, যা পিরিয়ডের মাথাব্যথা এবং ক্লান্তি বাড়াতে পারে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল পান করা জরুরি।

১২. খালি পেটে থাকা: দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে অ্যাসিডিটি ও দুর্বলতা অনুভব হতে পারে। তাই নিয়মিত অল্প পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

১৩. সুগন্ধিযুক্ত প্যাড ব্যবহার করা: কিছু সুগন্ধিযুক্ত প্যাডে রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই সাধারণভাবে সুগন্ধবিহীন প্যাড ব্যবহার করা ভালো।

১৪. পুরোনো প্যাড বা কাপড় ব্যবহার করা: স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরিষ্কার এবং নতুন প্যাড বা কাপড় ব্যবহার করা উচিত। পুরোনো বা অপরিষ্কার কাপড় ব্যবহারে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

১৫. তাড়াহুড়ো করা: পিরিয়ডের সময় শরীর ক্লান্ত লাগতে পারে, তাই তাড়াহুড়ো করে কাজ করা উচিত নয়। নিজের শরীরকে সময় দিন এবং বিশ্রাম নিন।

১৬. ভ্রমণ করা (যদি বেশি অসুবিধা হয়): যদি পিরিয়ডের সময় আপনার খুব বেশি শারীরিক অসুবিধা হয়, তবে এই সময় ভ্রমণ করা এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

১৭. সাঁতার কাটা (যদি ফ্লো বেশি থাকে): যদি আপনার ঋতুস্রাব বেশি হয়, তবে এই সময় সাঁতার কাটা উচিত নয়, কারণ এতে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

১৮. ডায়েট পরিবর্তন করা без পরামর্শে: পিরিয়ডের সময় কোনো প্রকার ডায়েট পরিবর্তন করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

১৯. ঠান্ডা পানীয় বা খাবার গ্রহণ: ঠান্ডা পানীয় বা খাবার পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, তাই এই সময় এগুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

২০. নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করা: প্রত্যেক নারীর শরীর আলাদা এবং পিরিয়ডের অভিজ্ঞতাও ভিন্ন হতে পারে। তাই নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করা উচিত নয়।

এইগুলো হলো পিরিয়ডের সময় কি কি করা উচিত নয় (perioder shomoy ki ki kora uchit noy) তার একটি তালিকা। এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি পিরিয়ডের সময় অনেক শারীরিক ও মানসিক discomfort থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

আরও জানুন:

পিরিয়ড ১০ দিনের বেশি হলে করণীয়

পিরিয়ড ১০ দিনের বেশি হলে করণীয়

উপসংহার

পিরিয়ডের সময় নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়া এবং সঠিক নিয়মকানুন মেনে চলা অপরিহার্য। পিরিয়ডের সময় কি কি করা উচিত নয় (perioder shomoy ki ki kora uchit noy) তা জানা থাকলে এই সময়টিকে আরও সহজ ও স্বাভাবিকভাবে মোকাবিলা করা যায়। মনে রাখবেন, আপনার স্বাস্থ্যই আপনার সবচেয়ে বড় সম্পদ।

FAQS

পিরিয়ডের সময় কি ব্যায়াম করা উচিত?

হ্যাঁ, হালকা ব্যায়াম যেমন যোগা বা হাঁটা পিরিয়ডের সময় করা যেতে পারে। তবে ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

পিরিয়ডের সময় কি ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করা উচিত?

সাধারণভাবে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করতে কোনো বাধা নেই, তবে যদি ঠান্ডায় আপনার সমস্যা হয় তবে হালকা গরম জল ব্যবহার করতে পারেন।

পিরিয়ডের সময় কি চা বা কফি পান করা যায়?

সীমিত পরিমাণে পান করা যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত ক্যাফিন গ্রহণ করা উচিত নয়।

পিরিয়ডের সময় কি সেক্স করা নিরাপদ?

হ্যাঁ, পিরিয়ডের সময় সেক্স করা নিরাপদ। তবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় কি?

গরম জলের সেঁক দেওয়া, হালকা মালিশ করা এবং বিশ্রাম নেওয়া পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

পিরিয়ডের সময় কতক্ষণ অন্তর প্যাড পরিবর্তন করা উচিত?

প্রতি ৪-৬ ঘণ্টা অন্তর প্যাড পরিবর্তন করা উচিত।

পিরিয়ডের সময় কি দুধ পান করা উচিত?

হ্যাঁ, দুধ পান করা উপকারী কারণ এতে ক্যালসিয়াম থাকে যা শরীরের জন্য ভালো।

পিরিয়ডের সময় কি চুল ধোয়া যায়?

হ্যাঁ, পিরিয়ডের সময় চুল ধোয়া যায়। এর সাথে পিরিয়ডের কোনো সম্পর্ক নেই।

পিরিয়ডের অনিয়মিত হওয়ার কারণ কি?

হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস বা কোনো শারীরিক সমস্যার কারণে পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে।

পিরিয়ডের সময় কি কোনো বিশেষ খাবার খাওয়া উচিত?

ফল, সবজি, প্রোটিন এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।

আরও পড়ুন: হাই প্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত?


সোশাল মিডিয়ায় শোয়ার করুন!

Leave a Comment